দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বরগুনায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে গর্ভবতী স্ত্রীর পেটে লাথি দিয়ে সন্তান নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর মা হেলেনা বেগম। বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান মামলাটি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা এলাকার অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মনিরুল ইসলামের মেয়ে সুমি আকতারকে ২০১৫ সালে রুবেলের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় রুবেল ছুটি নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি গিয়ে যৌতুকের জন্য স্ত্রী সুমিকে মারধর করতেন। বিভিন্ন সময় তারা রুবেলকে কয়েকলাখ টাকা দিয়েছেন। সবশেষ ৫ আগস্ট সকাল ৯ টায় তার বসত ঘরে বসে চাকরির প্রমোশনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি। এ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় উত্তেজিত হয়ে প্রথমে রুবেল সুমির তলপেটে লাথি মারে। এরপর রুবেলের বাবা মোস্তফা গাজী ও মা সাহানা বেগমও সুমিকে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করে। সুমির ডাক চিৎকারে কেউই এগিয়ে আসেনি।
পরে সুমি তার বাবাকে মুঠোফোনে ঘটনা জানালে বাবা মনিরুল ইসলাম, মামা বশির গাজী, মামুন গাজী ও জলিল ফকির রুবেলের বাড়ি থেকে সুমিকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার একদিন পর সুমির রক্তপাত শুরু হয়। ৮ আগস্ট ডাক্তার আজমিরী বেগম সুমিকে আলট্রাসনোগ্রাম করার কথা বলেন। আলট্রাসনোগ্রামে সুমির দুই মাসের গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়েছে বলে জানা যায়।
সুমি বলেন, যৌতুকের জন্য আমার স্বামী প্রায়ই মারধর করত। এবার এ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় শশুর-শাশুড়ি আমার সন্তানকে বাঁচতে দিবি না বলে হুমকি দেয়। সুমির মা হেলেনা বেগম জানান, ১০ আগস্ট থেকে মামলা করার জন্য একাধিকবার বরগুনা সদর থানায় গিয়েও মামলা করতে পারিনি। নানান বাহানায় আজ-কাল মামলা নিবে করবে বলে সদর থানা পুলিশ আমাকে ঘুরিয়েছে। আমি নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা করেছি। আদালত মামলা গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে রুবেল বাংলানিউজকে বলেন,আমি ছুটিতে বাড়িতে গেলে আমার স্ত্রী আমার সাথে দেখা করেনি। মামলার ঘটনা সত্য নয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম তারিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাদীর হেলেনা বেগমের অভিযোগ সত্য নয়। একবার লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরে হেলেনা বেগম বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার কথা বলে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়।
Leave a Reply